ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

তোমার লাল সালু

কাজী শামীমা রুবী

বুকের ভিতর একখান চাপা কষ্ট।

বেবাক তোলপাড় কইরা ধ্বংসের খেলায়

মাইতা উঠতাছে।

প্রথম দেখার দিন চোখ মেইলা চাইতে

পারি নাই তোমার মুখের দিকে।

তোমারে দেখনের হাউস শত জনমের।

তোমার দুই খান হাত ছুঁইয়া দেখার লাইগা

ছটফট কইরা মরতাম মরমে।

খালি লজ্জায় কইতে পারতাম না মনের কতাখান।

যতোবার সুযোগ পাইতাম লুকাইয়া দেখার,

চোখের দরিয়ায় দিতাম ডুব সাঁতার।

দু’জনে মিলা তুইলা আনতাম লাল শালুক।

মাঝ দরিয়ার জলের গায়ে তোমার জলছবিখান

দেইখা পরানে বরফের লাহান

শান্তির পরশ বুলিয়া দিত।

চান্নি-পসর রাইতে জোনাক পোকার আলো

জ্বালাইয়া বসতো হাট।

মোহন বাঁশির সুরে তোমারে নিয়া কত গান বানতাম।

স্বপন দেখতাম তোমারে লইয়া সুখের সংসার পাতার।

কত রঙ্গিন স্বপন সুখে বাসর বান্ধার।

তন্দ্রার মইদ্যে দেখা মিলতো তোমার।

তুমি মনে কইরা নকশী কাঁথাখানরে খাবলা মাইরা ধরতাম কইল্জার ভিতর।

মনের ভিতর কত জমানো কতা!

সারাদিন রাত জুইড়া কেবল তুমি আর তুমি।

রাত পোহাইতে শিউলি ফুলের মালা গাঁইথা

খোঁপায় জড়াইতাম তোমার নামে।

মনের গোপন কথা গুলারে উজার কইরা

রঙ্গিন সুতায় সেলাই কইরা দিতাম।

নকশিকাঁথার শরীর জুইড়া থাকতো

নীলপদ্মের জীবনগাঁথা।

যত্ন কইরা তোমার লাইগা রুমাল বানাইতাম।

রেশমী সুতার প্রত্যেক ফোঁড়ে থকতো তোমার নামের ভালোবাসার ছোঁয়া।

চোখের কাজলে আঁকতাম তোমার ছবি।

সেই তুমি এতো নিষ্ঠুর হইতে পারলা!

ভাসান দিয়া ডিঙ্গি নৌকা খান লইয়া

কই গেলা গো!

প্রণয়কালে খুবতো কইতা তোরে দিলাম

আদর কইরা নতুন নাম।

তুই আমার পরানের লালসালু।

সব ছাইড়া গেলা কোন সুখের লাইগা।

এখনো তোমার পথের পানে চাইয়া থাকে নিদ্রাবিহীন মনকষ্টে তোমারই লাল সালু-

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *