নিখোঁজ আলোকচিত্র

নিখোঁজ আলোকচিত্র
পারভেজ শিশির
বাইফোকাল চশমার লেন্সের
সামনেই অনড় কিছু পিলার
কাল্চে নীল আকাশকে মাথায়
ক’রে কাঁটাতারে বাঁধা, ঘর্মাক্ত আর
ভ্যাবাচ্যাকা শহর যেন ভ্রু-কুঞ্চিত
চোখে আমায় দেখছে…
আর আমি যেন এক
দলছুট অত্যাশ্চর্য চিড়িয়া,
এমনভাবে শহরের সমস্ত
দোকানের, হর্নবিহীন গাড়ির,
‘কাগজ বাড়ি’র লাইটবাল্ব,
হেডলাইট আর জানালাগুলো
আমার দিকে নির্লজ্জভাবে
তাকিয়ে আছে…
কী জানতে বা জানাতে
চায় এই নিষ্প্রাণ
জ্বলো-জোনাকগুলো
নির্জ্ঞান আমার কিছুই বোঝা
হয়ে উঠছে না…
কোনো শাব্দিক কথোপকথন
নেই ব’লে যেন
এই আগুনমুখো আলোক
উৎসগুলো,
ক্রমেই মহা বিরক্তিকর
হয়ে উঠছে আমার বয়স্ক চোখে…
কংক্রিটের একটা দেয়াল
একচোখ অফ-হোয়াইট
আলো নিয়ে
আমায় হঠাৎ জিজ্ঞেস করে –
আমি কী আর কোনদিন অন্ধকার দেখবো না?
জ্বলে জ্বলে তো শেষই হ’লাম
শুধু! একটু কী আঁধার পাওয়া
যাবে আর কোনদিন?
বিমূঢ় চোখে ও কানে দেখে
শুনে ৯০ ডিগ্রি হতে ডানে,
আমার পতন হতে চ’লেছিল…
আমি নিরুপায়,
না হ’লে পতন নিশ্চিত…
এই ফাঁঙ্গাস পড়া, সবুজ
ভেলভেটের দেয়ালই শুধু নয়,
সব কিছুর ‘সব কিছু’
আমাকে এবার আষ্টেপৃষ্ঠে,
অচিন্তনীয়ভাবে অসহনীয়
বিষাক্ত আলোর সূঁচ ফোটাতে শুরু ক’রলো –
“কোথায় একটু আঁধার পাওয়া যাবে? কোথায়…
একটু আঁধার পাওয়া যাবে?”
ভিসুভিয়াসের মত
অনিবার্যভাবে অনেকক্ষণ
রক্তবমি করে,
আমাকে কন্ঠচেরা
চিৎকার করে বলতেই হলো –
“এ নগর ফিরিয়ে নাও,
চলো অরণ্যে বাসা বাঁধি…