অক্টোবর ২৮, ২০২৪

চিঠি

জে এফ আইরিন

প্রিয়তমা,
তুমি ভালো আছো? কতদিন পর তোমাকে একটা চিঠি লিখছি নীল চিঠি। সত্যি বলতে তোমাকে মাঝে মাঝে খুব ভাবি। ভাবি আমি তোমার ভালো তেমন কেউ হতে পারিনি দিতে পারিনি কোন দামি উপহার।সাধ্য ছিল না তবে তোমাকে দিয়ে ছিলাম একগুচ্ছ নীল গোলাপ মাড়িয়ে দিয়ে বলে ছিলে রঙ পাওনি অভিমানী জানতাম কষ্ট পেয়েও কষ্ট পায়নি। বুঝতাম না তো। আমি তোমার জন্য অনেক গুলো জোনাকি ধরে এনেছিলাম তুমি আনমনে দাঁড়িয়ে ছিলে খোলা আকাশের নিচে চেয়ে চেয়ে শুধু দেখেছিলে সেদিনও কিছু বলনি। মুক্ত আকাশে উঠে গেল মিটমিট আলো জ্বলে তার আলোয় আমি তোমাকে দেখেছিলাম দুচোখ ভরে। কি সুন্দর মুখটা মায়াতে ভরা। বৃষ্টি ভেজা বিকেলে শঙ্খচিল উড়ে চলে যায় ভিজতে ভিজতে কতদূর আকাশে কোলে কোলে আমি তোমাকে বলে ছিলাম দেখনা আমাদের মন দুটোই হারিয়ে নিয়ে যায় অজানা দেশে ফিরে আসবো না তুমি তোমার অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেছো তখনি কিছু বলনি। ভেজা পদ্মের পাঁপড়ি মেলে ধরে ছিলাম সমুখে একবার পরের মতো তাকিয়ে ছিলে। সুঘ্রাণ আর মুগ্ধতা উষ্ণ পরম তৃপ্তি তোমাকে ঘিরে ধরলেও তুমি সাড়া দাওনি।
কতদিন তোমাকে গুচ্ছ গুচ্ছ ঘাস ফুল খুঁজে খুঁজে এনেদিয়েছি তুমি ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলেছো আদরে রাখোনি। বিকেলের রোদ পাহাড় ঘেঁসে আবীর রঙে রঙিন হতো মুঠো মুঠো ভরে তুলেদিয়েছি তোমার হাতে তোমার খোলাচুলে তোমার শাড়ির আঁচলে তুমি হেসেছিলে কিন্তু বড় ম্লান ছিল। ভাবতাম তোমার নিঃসঙ্গতা কেটে গেলে আমাকে তোমার হাসি উপহার দেবে কখনো দাওনি। তোমাকে কিনে দিতে চেয়েছিলাম দুজোড়া নুপুর ঝিনঝিন মাতুয়ারা আষাঢ়ের বৃষ্টির মতো শব্দ নিয়ে হেঁটে যাবে ঘাসের মখমলে চাদরে পা ফেলে শুধু দূর থেকে ভেসে আসবে আমি খুঁজে নেবো তোমার সান্নিধ্য সেটাও করনি।

পাগলী মেয়ে হাসছো। চিঠিটা পড়ো। তোমার হাসি ভুবন জুড়িয়ে যায়। নেমে আসে ঘুম পৃথিবীর সুন্দরতম ঝিলিক।
হীরের নেকলেস বা আংটি আমি দেবো এমন সাধ্য ছিল না ঠিক তবে সাগরের ঢেউ থামিয়ে দুহাত দিয়ে কুড়িয়ে ছিলাম নুড়ি পাথর ঝিনুক মালা নিজ হাতে পড়াবো বলে। সে সৌভাগ্য আমার হয়নি। বুকের মধ্যে টানা নিঃশ্বাসের শব্দ শুনছি একা একা। জেগে একটা তারা স্থির আকাশে উড়ো মেঘ গুলো আমার মতো ছুটছে। তোমার মতো কারো খোঁজ নিতে। একটা কথা বলি যেদিন আমি থাকবো না একটি বার আসবে আমাকে দেখতে তোমার সমুখ দিয়ে লাশ হয়ে দাফনের জন্য অনেক লোক নিয়ে যাবে তাদের ভিড়ে দাঁড়িয়ে থেকেও জুঁই ফুলের মালা পড়ে আর বেগুণী শাড়ি একটা টিপ পড়বে। একফোঁটা অশ্রু দিও ভালোবাসা তো কখনো দাওনি আমার নিস্তেজ শরীর কবরে শায়িত তোমার ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু অনুভব করবে তুমি ভালোবাসতে। সেই আনন্দে একা থেকে যাবো খুঁজে পাবো পরম তৃপ্তি। স্থির হয়ে ভাববো শুধু তোমাকে।
নীল চিঠিটা পড়ো একবার একবার বুকে জড়িয়ে নিয়ো আমার সোহাগ তোমার প্রতি। খুব ভালোবাসি আজো বাসি আগামী কাল তো চিঠি দিবস তাই নীল চিঠি টা আজ খুব লিখতে ইচ্ছে করলো। সম্মুখ থেকে দূরে আছি বলে ভেবোনা আমি আর তোমাকে ভাবিনা।
ভালো থাকো অনেক ভালো।
ইতি তোমার
বিবেক।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *